সোমবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৫

বিরিশিরি ভ্রমণ - 



ঢাকার মহাখালি বাসস্ট্যান্ড থেকে জিনাত পরিবহণ যায়। সারাদিনই কিছু সময় অন্তর অন্তর গাড়ি ছেড়ে যায়।
দিনে ভাড়া ৩০০ টাকা আর রাতে ৪০০। রাস্তায় মাঝে মাঝে লোক উঠাবে, তবে রাতে প্রায় ডাইরেক্ট। তাই কোন ঝামেলা হই না। রাতে তাড়াতাড়ি পৌঁছান যায়।
ম্যানেজার এর নাম আনিস - ০১৭১৯৭৪৫৭৯২ , ০১৯৩৫৯৪৫২৮০। (একটায় না পেলে আরেকটা পাবেন। তবে আগেই বলে রাখি খুবই বেরশিক লোক ! )
আমার মতে, বেস্ট অপশন হল রাতে যাওয়া। টিক ১২টায় গাড়ি ছাড়বে, নামায় দিবে ভোর ৫ টায়। আর আমারা যখন ফিরে আসি, বাস এ উঠি ৮.৩০ এ আর মহাখালি পৌছাই ৩.০০।


কই থাকবেন -
অনেকেই না থেকে সারাদিন ঘুরে রাতের বাসে আবার ফিরে আসতে পারেন। আবার রাতে এক্তু ঘুম দিয়ে সকাল ৭.৩০ থেকে বাস ছাড়ে। যেকোনো একটা ধরে ফিরে আসতে পারেন। এইতা এক দিক থেকে ভাল কারণ, সারাদিন

ভালই ধকল যাবে (যদি শব জাইগা মতামুতি ঘুরে দেখতে চান।)। আর সূর্যের প্রবল তাপ তো আসেই।
সবাই, ywca বা ywmc এই দুইটা রেস্টহাউস এর কথা বেশি বলে। এগুলা বেশ ভাল। তবে শব সময় জাইগা নাও পেতে পারেন। যাওয়ার বেশ কিছু দিন আগে বুকিং দিলে ভাল হয়। এই দুইতার মধ্যে আবার YWCA তা বেশি ভাল।

এখানে এসি বা নন এসি দুই ধরনের কামরাই আছে। আর কিছু হোটেল আসে, জার মধ্যে স্বর্ণা হোটেল অন্যতম। এটা কম খরচের মধ্যে বেশ ভাল। পুরো বাস-স্ট্যান্ড এর সাথেই। আমরা তিন বন্ধু একটা ডাবল বেড এর কামরায়

ছিলাম। সাথে লাগোয়া বাথরুম আছে।
YWCA - ০১৭১২ ০৪২৯১৬(আমিতা),
এসি - ১২০০ টাকা, নন এসি - ৮০০ টাকা

Sorna Guest house - ০১৭১৭ ০৩৩৯৯৮,
ডাবল বেড- ৫০০ টাকা
এগুলা স্বর্ণা গেস্ট হাউসের ছবি।



কিভাবে ঘুরবেন -
দুইটা অপশন আসে, রিকশা আর মোটর-সাইকেল। তবে আউত-রিক্সা নিতে বলব আমি। কারণ সময় ও ভাল যাবে, আর ভ্রমণ তা দ্রুত শেষ হয়ে যাবে না।
ভাড়া কত পরবে, এতা আপনার দক্ষতা আর আসে পাসে কোন ভাল লোকজন থাকলে, তাদের উপর নিরভর করবে। প্রথমে তাদের জিজ্ঞেশ করে নিবেন, পুরোটা ঘুরতে কেমন খরচ পরবে, তারপর দামাদামি।
একটা অটো রিক্সা তে আমরা তিন বন্ধু মিলে ঘুরে বেরাইসিলাম, প্রায় ৮০০ টাকাতে টিক হইসিল, পরে আমরা তার খুসি হয়ে মত এক হাজার টাকা দিসিলাম।
আর  মোটর-সাইকেল এ ঘুরলেও এরকম ই লাগবে। তবে পুরোটা ঘুরতে সময় কম লাগবে। আর কস্ত কম হবে। কারণ মাঝে মাঝে রিকশা থেলা লাগবে, বালুর রাস্তার উপর । তবে এতা কোন ব্যাপার না, ঝটিকা ট্যুর এ জাবেন আর
একটু কষ্ট করবেন না ! এতাই তো আসল মজা।
আমাদের যে রিকশা ওয়ালা ছিল, তার নাম সইকুল। খুবই দক্ষ লোক, আর সব যায়গা চিনে। আর তার রিক্সাও বেশ চওড়া এবং ভাল।
তবে যাকেই টিক করেন, ভাল করে জিজ্ঞেস করে নিবেন যে নদীর এপার আর ওপার যা আছে সব দেখাতে হবে, সকাল থেকে সন্ধার আগ পর্যন্ত, কত নিবেন ?
সইকুল - ০১৯২৪ ১৮১১০৩


সাথে কি রাখবেন -
রিকশা বা বাইকে যেটাতেই যাত্রা শুরু করেন, পথে ঘাটে তেমন দুই একটা টং এর  দোকান ছাড়া কিছু পাবেন না। সাথে পর্যাপ্ত পানি, আর কিছু শুখনা খাবার অবশ্যই রাখবেন। আর যত সংক্ষিপ্ত জামা কাপড় পরা যাই, ততই
মঙ্গল। 3 quater, tshit এগুলা বুঝাচ্ছি। আর পারলে ক্যাপ রাখবেন বা ছাতি রাখবেন।

কি কি দেখবেন -
চেষ্টা করবেন সকাল সকাল শুরু করার। এই  কি দেখবেন, এটা আমি আর বলালাম না, নেট এ অনেক এরকম ছবি সহ ব্লগ আছে। ওখানে দেখলে ভাল ধারণা হবে। তবে থাক না, একেবারে নাহই গিয়েই আবিস্কার করুন। তবে টিম এ অন্তত একজন, সব জাইগা গুলা নোটকরে নিলে ভালও করবেন। তাহলে কেঊ ঠকাতে পারবে না।

Wikipedia বিজয়পুর চীনামাটির খনি,রানীখং গীর্জা, কালচারাল একাডেমি, কমলা রাণী দিঘী, সোমেশ্বরী নদী ও কুল্লাগড়া মন্দির।

তবে কিছু ছবি দিচ্ছি, মিলায় নিয়েন ! :D

ভয় নাই, নৌকা ডুবে না ! :v

 সোমেশ্বরী নদী। 

রাস্তা ঘাটের ব্যাপক উন্নতি হচ্ছিল তখন। আসা করি এখন পুরা পাকা রাস্তা। ইন্ডিয়ার সাথে যোগাযোগ ভাল করার জন্য উন্নতি করা হচ্ছে।


একমাত্র হসপিটাল।




বন্ধু মির্জা এখন পাত্রি খুজছে। আছে কেও ? :D


মেঘালয় পাহাড়। এটা আপনার মোটামুটি পুরো ভ্রমণ জুড়েই সাক্ষি হয়ে থাকবে।, এটা পুরোপুরি দেখতে একদম শেষ মাথায় আসতে হবে। এখান থেকেই দেখা সুরু করা ভাল। শেষ থেকে শুরু। এখানে একটা আর্মি দের ক্যাম্প আছে। বন্ধু সুন্নাত এর একটা দারুন ছবি। :D






 গির্জা।







বন্ধু সুন্নাত আর মির্জা। মাঝের টার নাম জানি না।



এরকম রিকসা ঠেলা লাগে মাঝে মাঝে, তবু খুব এ কম। আর এথেকে আপনি বাচতে পারবেন, যদি আপনি cameraman হন ! (আমার মত ! :D )



গারো পাহাড়, ইন্ডিয়ান বর্ডার দেখতে পারবেন। অসাধারণ একটা যায়গা।



 কি কারণে যেন এই দুই পিচ্ছি আমার উপর রেগে ছিল ! :v


অবশেষে আমি আর বন্ধু মির্জা।








কি খাবেন -
খাবার দাবার অতি সাধারণ। তবে দাম কম। সকালে যেকোনো হোটেল থেকে রুটি/পরটা, ডিম, ভাজি, ডাল এসব পেটে চালান দিতে পারেন।  আমারা দপুরে ভাত আর রুই মাছ খাইছি। ৮০ টাকার মত লাগসে প্রতি জনে। তবে চেষ্টা করবেন, নদীর অপার থেকে যেন বেলা দুইতার আগেই চলে আসতে পারেন। কারণ ৩ টার পর থেকে হোটেল থেকে আইটেম কমতে থাকে। কারণ অদের সীমাবদ্ধ কাস্টমার, তাই রান্নাও একটু কম করে। তবে খাওয়ার আগে ভাল করে দাম জিজ্ঞেশ করে নিবেন, অনেকে বাইরের লোক দেখলে দাম বাড়ায় দেয়।
এটা সকালের নাশতার মুহূর্ত - (আমি ক্যামেরাম্যান ! :D )

তবে এই মালাই চা তা যেন বাদ না যায়। দাম- ২০ টাকা প্রতি গ্লাস।
 

আর সন্ধ্যায়, হোটেল এ ফিরে ফ্রেশ হয়ে বাজারের দিকে যেতে পারেন। কিছু ভাল মিষ্টির দোকান আছে। (ভোজন রশিক দের জন্য :v )


কেমন বাজেট - 
এটা পুরটাই নির্ভর করে আপনি কিভাবে থাকবেন, কিভাবে জাবেন, কি খাবেন আর কিভাবে দামাদামি করবেন। আমরা ২০১৪ সালে ৩ বন্ধু রাতের বাস এ করে গিয়ে এক দিন ছিলাম, পেত পুরে খাওা দাওা সহ, পার হেড ১৫০০ টাকার মত লাগসিল।


ছোট একটা অনুরোধ করে শেষ করব। জাইগাটা এখন নতুন। অনেকেই যানে না, বা চিনে না। আপনি যাবেন, আর পাঁচ জনকে বলবেন। কিন্তু অনুরোধ, যায়গাটা নোংরা করবেন না। প্লাস্টিক বা অপ্রয়োজনীয় জিনিশ পত্র গুলা ঘুরাঘুরি করার সময় একটা বাগে রেখে দিন। পরে হোটেল বা শহরে এসে নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলুন।

ঢাকা থেকে এক দিনের সংক্ষিপ্ত ভ্রমণ হিসাবে বিরিশিরি জাইগাটা অসাধারণ। পাহাড়, নদী, গ্রাম, নৌকা, সবই আছে। একদিনের অসাধারণ adventure.


আর কিছু লিঙ্ক -
১) http://www.amrabondhu.com/vangapencil/191
২) http://www.somewhereinblog.net/blog/shoummo71/28885985
৩) https://www.facebook.com/UNSTOPPABLETRAVELERSCLUB/posts/239410456228270
৪) http://www.sachalayatan.com/taxonomy/term/12922
৫) http://www.shobdoneer.com/rajeen/16301
৬) https://www.facebook.com/birisiri/notes
৭) http://www.beshto.com/questionid/7942